এস এম রেজাউল করিম
বাংলাভাষার শুদ্ধতা নিয়া একটা গুরু চিন্তা করতেছেন এই সময়ের সরকার, বাংলা একাডেমী, বুদ্ধিজীবীগণ। আইন পাশ হইতেছে সংসদে, বাংলা একাডেমী বাংলাভাষার দেখভালের, ভরণপোষণের দায়িত্ব পাইতেছে শুনতেছি। বাংলাভাষার দুরবস্থা নিয়া দেশে বুদ্ধিবৃত্তিক তৎপরতা চলতেছে। যেইটারে দুরবস্থা বলা হইতেছে সেইটা যে দুরবস্থ—এই ব্যাপারে বাঙালী জাতীয়তাবাদীগণে ঐকমত্যে পৌঁছাইছেন। দুরবস্থা মনে না করা বুদ্ধিবৃত্তিক কিছু তৎপরতাও আছে, এই ভাবনাও যে আছে তা বেশ খোঁজখবর না নিলে টের পাওয়া যায় না, অধিপতি মিডিয়ায় তাদের জায়গা কম।
—————————————————————–
এইগুলা বিকৃত হইলে ‘প্রকৃত’ বাংলা একাডেমী কই পাইলো সেই ব্যাপারে একাডেমীর কোনো ব্যাখ্যা থাকার কথা, ব্যাখ্যাটা পাই নাই, ভরসা করি হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী বাংলা জাতীয় কিছু হইবে সেইটা। এর অর্থ কাহ্নপার লেখা বা উচ্চারণ হইতে পারে, চণ্ডীদাস বা মঙ্গলকাব্যও হইতে পারার কথা, কিন্তু তা হবে না, তাইলে বাংলা একাডেমী সেইসব ভাষায়/উচ্চারণে বিবৃতি দিতো, বাংলা একাডেমী তা দেয় না। বরং উনিশ/বিশ শতকের ঔপনিবেশিক আমলের কলিকাতায় শিক্ষিত বাঙালীর ভাষাই প্রকৃত বাংলা বইলা চেনে বা চেনায় বাংলা একাডেমী
—————————————————————-
আমার চোখে পড়া আলোচনাগুলায় দেখতেছি—আলাপটা লেখা নিয়াই প্রায়। কিন্তু বাংলা একাডেমীর ভাষ্য যতটা জানি তাতে বাংলা উচ্চারণ তার একটা প্রধান চিন্তা—এফএম রেডিওগুলা, ইংরাজি মাধ্যমে পড়ুয়াদের বাংলা উচ্চারণ নিয়া চিন্তা কেবল বাংলা একাডেমী না পরিচিত অনেকের মধ্যে দেখতেছি। বাংলা একাডেমী এইটারে বিকৃতি মনে করে, এইটা ঠেকানোর জন্যও আইন করতেছে শুনতেছি। এইগুলা বিকৃত হইলে ‘প্রকৃত’ বাংলা একাডেমী কই পাইলো সেই ব্যাপারে একাডেমীর কোনো ব্যাখ্যা থাকার কথা, ব্যাখ্যাটা পাই নাই, ভরসা করি হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী বাংলা জাতীয় কিছু হইবে সেইটা। এর অর্থ কাহ্নপার লেখা বা উচ্চারণ হইতে পারে, চণ্ডীদাস বা মঙ্গলকাব্যও হইতে পারার কথা, কিন্তু তা হবে না, তাইলে বাংলা একাডেমী সেইসব ভাষায়/উচ্চারণে বিবৃতি দিতো, বাংলা একাডেমী তা দেয় না। বরং উনিশ/বিশ শতকের ঔপনিবেশিক আমলের কলিকাতায় শিক্ষিত বাঙালীর ভাষাই প্রকৃত বাংলা বইলা চেনে বা চেনায় বাংলা একাডেমী।
সঙ্গীত আমি বুঝি না কিন্তু স্বরলিপির কথা জানি; উচ্চারণ বিষয়ে বাংলা একাডেমীর চিন্তার আবশ্যিক ফল হবে মাত্রাওয়ালা স্বরলিপিসহ পুরা বাংলাভাষার অভিধান প্রকাশ, সেই অভিধান পড়তে হইলে স্বরলিপি বিষয়ে পূর্বপাঠ থাকতে হবে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে/ইংরাজি মাধ্যমের বিদ্যালয়ে সঙ্গীত মনে হয় আবশ্যিক বিষয় হবে, বাংলা সঙ্গীতের উপকার হইতে পারে তার ফলে। বাংলাভাষার প্রতি একাডেমীর এই প্রেম বাংলাভাষীগণের জন্য আনন্দের হবার কথা, অথচ আমার মতো অনেকেই এই প্রেমে আনন্দিত হইতেছে না; কারণ, এই প্রেম বাংলাভাষাকে অক্ষয় করবার জন্য বাংলার মমি তৈরি করতে যাইতেছে, যেহেতু বাংলা এখনো মরে নাই আর মমি করার জন্য মৃতদেহ দরকার তাই বাংলাভাষাকে সংসদ মৃত্যুদণ্ড দিতে যাইতেছে, মৃতদেহের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পাইতেছে একাডেমী।
যার প্রতি প্রেম তার এইরকম মরার দরকার হয়, বিশেষকরে পিতৃতন্ত্রে; মায়ের নারীসত্তা, শরীর বা যৌনসত্তার মৃত্যু ছাড়া আদর্শ মা হয় না, মাতৃত্ব যৌনতায় পঙ্গু হয়, মায়ের যৌনতার চাইতে গুরু কোনো বেদনার সাথে পিতৃতন্ত্রী সন্তানের পরিচয় হয় না। মায়ের শুভ্রতা, পবিত্রতা নস্যাৎ করে যৌনতা, যৌনতা মাতৃত্বের দূষণ পিতৃতন্ত্রে, মায়ের সাথে পিতার যৌনতা মায়ের যৌনতা না, পিতাকে সার্ভিস দেওয়া। বাংলা-পিতৃতন্ত্রী বাঙালীর মা, বাংলার এর থেকে বড় বিপদ আর কী আছে? আজকের যেকোনো বাংলাই বাংলা মায়ের অবৈধ যৌনতার ফল, যাকে ভক্তি করতে হবে তারে পবিত্র রাখা দরকার। বাংলার এই দশা যেমন বাঙালীর মা নারীর জীবনকে হাজির করে তেমনি আবার বাঙালীর মা নারীকে প্রতিনিয়ত দেখে বাংলার দশাও বোঝা যাইতে পারে—মাতৃত্ব নামের সোনার কফিনে মৃত আর পূজিত।
আবার, একেশ্বরবাদের প্রমাণ জোগার করে দেয় ইউরোপের বিজ্ঞান, বিজ্ঞান দেখায়—পরম সর্বদাই একক, যেমন করে দ্বিতীয় ঈশ্বর নাই। ‘সত্য’ তো একটা, একাধিক ‘শুদ্ধ’ তো হইতে/থাকতে পারে না, বিজ্ঞানেরও নবী হইতে/থাকতে হবে, হয়; একক ‘শুদ্ধ’-কে খুঁইজা বের করতে হবে, প্রচার, রক্ষা করতে হবে, নইলে তো ধর্ম রক্ষা হয় না। ‘শুদ্ধতা’ একটা চিন্তার বিষয়, বাংলাদেশ ঐ ধর্মবিজ্ঞানের গ্রাহক, ‘বিশুদ্ধ পরম’-এর চিন্তা তো সে না কইরা পারে না, বাংলা একটা, তারে খুঁইজা বের করতে হবে, বাকি সব বিকৃত বা ভেজাল। বিদ্যাসাগর হিন্দুধর্মের আসল সত্য বের করেছিলো পুরাণ ঘেঁটে, ওয়াহাবী আন্দোলন বাংলার মুসলমানদের কিতাবী সহী ইসলাম শিখাইছে। কিতাব একটা পবিত্র জিনিস, তা পয়দা করতে হইলে পবিত্র হইতে হবে আগে, মুখ তো প্রাত্যহিক নাপাক বিচ্যূতি, তারে কিতাবে আনার চেষ্টা কিতাবের ভক্তিযোগ্যতায় প্রশ্ন তোলে, মুখের স্বরবিচ্যূতি কিতাবকে বড়ো বেশি লৌকিক করে দেবে। কিতাব ঐশী, মানুষের তবে মানুষ থাকা যাবে না, কিতাব হয়ে যেতে হবে, অনুভূতিকে গড়েপিটে নিতে হবে স্বরের ব্যাকরণ দিয়া, সভ্য অনুভূতি সর্বদাই কিতাবি। বাংলা একাডেমী তাই ঔপনিবেশিক পিতৃতান্ত্রিক সভ্য দায়িত্ব কাঁধে নিছে, প্রকৃত বাংলা খুঁজে বের করার, পেয়েও গেছে, শ্রদ্ধেয় মৃত বাংলা মাকে ভক্তি সহকারে দেখভাল করবে এখন। মায়ের একটা মাজার প্রতিষ্ঠার সাড়ম্বর আয়োজন চলতেছে।
বিশুদ্ধতা নিয়া আরো চিন্তা করে বর্ণবাদ, শুদ্ধচিন্তিত জার্মানরা কম হত্যা করে নাই, বর্ণবাদী মাপামাপিটা আছে, তাই ‘সংকর’ হইয়া যাওয়া নিয়া চিন্তাও আছে; দক্ষিণ এশিয়ায়ও ব্রাহ্মণ আর শূদ্র মিললে চণ্ডাল হয়, চণ্ডাল একটা গালি, হওয়াটা ভালো না। এই চিন্তাটা বাংলাচিন্তিত একাডেমী, বাংলা মায়ের সন্তানেরা করতেছেন, চণ্ডাল বাংলা নিয়া তারা চিন্তা করেন, সংকর তাদের আতংকিত করে, তারা খাঁটি বাংলা থাকতে চান, এই খাঁটি বাংলা আবার তৎসম, তদ্ভব, বিদেশী কতিপয় শব্দ দূষিত করতে পারে না, তারা পর্যাপ্ত ধোয়া; ঔপনিবেশিক মিশনারির হাতে তৈরী ব্যাকরণজাত বাংলাশিক্ষিত কলিকাতা অথবা স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঐ শব্দগুলারে ধুইয়া, শুকাইয়া, খাইয়া এমনভাবে উগরাইয়া দিছেন যে ওইগুলা বাংলা হইয়া গেছে, বর্ণবাদী ‘খাঁটিত্ব’ তার আগে থেকে শুরু করা যায় না, তাইলে যে রবীন্দ্রনাথ ‘সংকর’ হইয়া পড়েন, আইউব খান রবীন্দ্রসঙ্গীত নিষিদ্ধ কইরা বাংলা আর রবীন্দ্রনাথ সমার্থক কইরা গেছেন, আইউব খানের প্রতি এই বাঙালীর অপ্রকাশ্য কৃতজ্ঞতা আছে, তিনি যে বাঙালীরে বাংলা চিনাইয়া গেছেন। রবীন্দ্রনাথরে যারা আদর্শ বাংলা মানে না তারা একেকটা আইউব খান; বরিশাল, নোয়াখালী, সিলেটের অশিক্ষিতগুলা সবাই আইউব খান, বাংলাদেশ আইউব খানে ভরা, এত আইউবকে ঠেকাবে কী করে? এত বড়ো জেলখানা কই? একটাই উপায় বাংলাদেশরে জেলখানা ঘোষণা দেওয়া। জেলখানায় চিকিৎসা হবে—স্বরচিকিৎসা। ৫২ সালে এদের সবার ভাষা বাংলা ছিলো, নইলে বাংলা সংখ্যাগরিষ্ঠের ভাষা হয় না; এখন ৫২ না, তাই ওইগুলা বিকৃত বাংলা, আপদকালীন ঐক্য ছিলো ওইটা, এখন আপদ নাই, এখন স্বরলিপিসহ প্রকৃত বাংলা শিখাইতে হবে।
সহি/শুদ্ধ যারা রাখতে চান বাংলাকে, তাদের প্রকাশ্য যুক্তি এইগুলা না। তাদের একটা যুক্তি হইলো—তারা বর্তমানে বাংলায় একটা নৈরাজ্য দেখতে পান; তারা আবার প্রকাশ্যভাবে নিজেদের গণতন্ত্রী দাবি করেন, তো গণতন্ত্রীগণ রাজা কেন চান—তা আবার বলেন না। বিপরীতে যারা বহু বাংলার কথা বলেন তারা কি আবশ্যিকভাবে নৈরাজবাদী? নৈরাজ্যবাদ তো অনেকগুলা ‘শুদ্ধ’-এর কথা বলবার কথা না, বরং শুদ্ধ আর অশুদ্ধ-এর আলাপটাই রহিত করতে চাইবার কথা, কারণ ‘শুদ্ধ’-ই তো রাজা। নৈরাজ্যবাদ ছাড়াই বহুত্ব চাওয়া যায়, গণতান্ত্রিক ডিসকোর্সই কদ্দূর পর্যন্ত বহুত্বকে সংকুলান করতে পারে, ততটুকুই এই গণতন্ত্রীগণ দিতে রাজি না, তখনি প্রশ্ন আসে—আদৌ তারা গণতন্ত্রী কিনা। সরকার যদি এমন আইন করে যাতে আগামী ১০০ বছর সে ক্ষমতায় থাকবে কিংবা যদি আইন করে যে আওয়ামী লীগ ছাড়া সকল রাজনৈতিক দল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করুক, সংসদ নির্বাচন করতে পারবে না—তাইলে এইটারে কি গণতন্ত্র বলা যায়? যদি বলা না যায় তাইলে কোনটা বা কোনগুলা বাংলা—এই বিষয়ক সকল তর্ক রদ কইরা দেওয়াটা, কোনো একটা বাংলাকে অনন্তকালের জন্য বাংলা বইলা আইনী ঘোষণা দেওয়াটা কেন গণতান্ত্রিক আচরণ হইতে পারবে?
—————————————————————–
একটা ব্যক্তিমালিকানার টিভি যদি সিলেট ছাড়া আর কোথাও যাইতে না চায় বা ইংরাজি পড়ুয়াদের কাছেই কেবল যাইতে চায় আর সেইজন্য তার ইচ্ছানুযায়ী ভাষা ব্যবহার করে তাতে রাষ্ট্রের কিছু বলবার থাকতে পারে কি? থাকাটা বৈধ হলে রাষ্ট্রীয় আর ব্যক্তি মালিকানার তফাত করা যাবে কোথায়? এমনকি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে যদি নাগরিকগণ প্রবেশ করতে না পারে (নাগরিকের ভাষা বাইরে রেখে যাইতে হইলে তা খর্বিত প্রবেশ।) তাহলে রাষ্ট্র তো নাগরিকসাপেক্ষ আর থাকে না; অর্থাৎ এমন রাষ্ট্র নির্মাণ তত্ত্বীয়ভাবে সম্ভব মানতে হবে যেই রাষ্ট্রে নাগরিক নাই। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় রেডিও-টিভিতে ইংরাজি ব্যবহার করা যাবে কিন্তু বরিশালের বাংলা বলা যাবে না, রাষ্ট্র তবে কার?
—————————————————————-
আরেকটা যুক্তি তারা দিয়া থাকেন। যোগাযোগের, বোধগম্যতার যুক্তি। তো একটা সাধারণ ভাষা যদি থাকে, সেই ভাষাটা তো কোনো একটা বর্গের ভাষা হইতে পারে না, তাইলে অন্য সবার উপর ওই বর্গের আধিপত্য কার্যকর হইলো বলতে হবে, বাঙালী ৫২ বা ৭১ সালে আধিপত্যের বিরুদ্ধে ছিলো, সেই বাঙালী জাতীয়তাবাদীগণ আজ আধিপত্যবাদী হইয়া গেলেন। পশ্চিম পাকিস্তানের আধিপত্য বৈধ ছিলো না, এই জাতীয়তাবাদীদিগেরটাও না। সাধারণ ভাষা দিয়া এখন পাঠ্যপুস্তক লেখা হইতেছে, রাষ্ট্রকর্ম চলতেছে; এইটা ধইরা নেওয়া, রাষ্ট্রে ক্ষমতাসীনদের খেয়ালবশবর্তীতা। এই ভাষাটা কাদের—তা নিয়া বহু আলাপ আছে, কলিকাতা, নদীয়া ইত্যাদি আলাপ। আমার আলাপটা আরো পরে—যখন সম্ভাব্য সাধারণ বাংলাকে আদর্শ বাংলা বা মান বাংলা দাবি করে কেউ, তখন এই বাংলার অধিকতর ইজ্জত হয় অপরাপর বাংলার বিপরীতে; এমনকি অপরাপর বাংলাকে অশুদ্ধ বা আঞ্চলিক বাংলা কইরা তোলে। সাধারণ থাকবার শর্ত অনেক থাকা, অনেক নাই তো সাধারণের প্রশ্নও আসে না। সাধারণ যখন আদর্শ হয় তখন তার শর্তকে অস্বীকার করতে চায়, সবাইকে চাপ দেয় আদর্শ হবার—এইটা সাধারণের ‘একমাত্র’ হইতে চাওয়া, স্বাতন্ত্র্যকে অস্বীকার—এই অর্থে ফ্যাসিজম। লেখক বা কথক যাদের কাছে পঠিত বা শ্রুত হইতে চাইবে তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবে সে কোন ভাষা ব্যবহার করবে। নোয়াখালীর কোনো একজন লেখক যদি বরিশালে বোধগম্য হইতে না চায় তাতে কার কী বলবার থাকতে পারে? লেখা বা বলা স্বয়ংক্রিয়ভাবে এমনকি একজনের নিকট বোধগম্য হবারও প্রতিশ্রুতি না, একটা ব্যক্তিমালিকানার টিভি যদি সিলেট ছাড়া আর কোথাও যাইতে না চায় বা ইংরাজি পড়ুয়াদের কাছেই কেবল যাইতে চায় আর সেইজন্য তার ইচ্ছানুযায়ী ভাষা ব্যবহার করে তাতে রাষ্ট্রের কিছু বলবার থাকতে পারে কি? থাকাটা বৈধ হলে রাষ্ট্রীয় আর ব্যক্তি মালিকানার তফাত করা যাবে কোথায়? এমনকি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে যদি নাগরিকগণ প্রবেশ করতে না পারে (নাগরিকের ভাষা বাইরে রেখে যাইতে হইলে তা খর্বিত প্রবেশ।) তাহলে রাষ্ট্র তো নাগরিকসাপেক্ষ আর থাকে না; অর্থাৎ এমন রাষ্ট্র নির্মাণ তত্ত্বীয়ভাবে সম্ভব মানতে হবে যেই রাষ্ট্রে নাগরিক নাই। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় রেডিও-টিভিতে ইংরাজি ব্যবহার করা যাবে কিন্তু বরিশালের বাংলা বলা যাবে না, রাষ্ট্র তবে কার? সাধারণ যদি আদর্শ হয়, সাধারণের ইজ্জত যদি বেশি হয় তবে হেনরি কিসিঞ্জারের আর আমার সাধারণ ভাষা ইংরাজি বলে আমার মানতেই হবে ইংরাজির ইজ্জত বেশি। আবার, বাংলা আর হিন্দির মাঝে ‘মূত্র’ সাধারণ শব্দ বিধায় উহা বাংলা ‘দই’ (আমি ঠিক জানি না ‘দই’ সাধারণ কিনা, হইলে অন্য কোন অসাধারণ ধর্তব্য।) হতে উত্তম? আমি তাই ভাবি না, বাংলা একাডেমী কী বলে?
Saturday, April 17, 2010
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment